নিজস্ব প্রতিবেদক : শতকোটি টাকা প্রতারণা করে সপরিবারে পালিয়ে যাওয়া সাতক্ষীরার প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক প্রাণনাথ দাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত রবিবার রাতে তাকে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গোবরডাঙা থানাধীন জামদানি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ (এসডিএফ)।
আকাশ বানী কোলকাতা, ডিডি-১ টেলিভিশন ও আনন্দবাজার পত্রিকাসহ পশ্চিমবঙ্গের কয়টি সংবাদমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করে।
গ্রেপ্তারকৃত প্রাণনাথ দাস (৪৬) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার টিকেট গ্রামের মৃত জুড়ন দাসের ছেলে ও বর্তমাসে পুরাতন সাতক্ষীরার বাসিন্দা।
গোবরডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পিংকি রাণী ঘোষ জানান, অবৈধপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে অবস্থান করছেন এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ গোয়েন্দা পুলিশের (এসডিএফ) একটি দল গত রবিবার রাতে প্রাণনাথ দাসকে জামদানি গ্রামের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে গোবরডাঙা থানায় সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনায় অবৈধপথে ভারতে আসার অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে প্রাণনাথের বিরুদ্ধে ফরেনার এক্ট ১৪(এ) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত সোমবার তাকে বারাসাত সহকারি বিচারিক হাকিমের (এসিজেএম) আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, প্রাণনাথ দাস ২০০২ সালে রুপালী লাইফ ইনসিওরেন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জেলা ও জেলার বাইরে বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বহু টাকা আত্মসাৎ করেন। পরে ২০১২ সালে ১২১ নং সমবায় রেজিষ্ট্রেশন মূলে প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি খোলেন প্রাণনাথ দাশ। সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বড় ভাই বিশ্বনাথ দাশকে নিয়োগ দেন। লাখপ্রতি মাসিক দেড় হাজার টাকা মুনাফা এবং ডিপিএসে সঞ্চয়কৃত টাকা পাঁচ বছরে দ্বিগুণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গত ১০ বছরে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষের কাছ থেকে শত কোটি টাকা প্রতারণা করেন।
প্রতারণার টাকা দিয়ে তিনি সাতক্ষীরার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ও জমি কেনেন। তবে গত বছর নিজের পৈতৃক ১১ বিঘা জমিসহ সকল জমি ও বাড়ি এবং দুটি অফিস বিক্রি করে দেন প্রাণনাথ। এছাড়াও তার কয়েকটি বাস ও প্রাইভেটকার বিক্রি করেন। এসব জমি বিক্রি করার খবর পেয়ে গ্রাহকরা মুনাফা ও আসল টাকা ফেরৎ চাইলে প্রাননাথ টালবাহানা শুরু করেন।
পরে এসব টাকা ফিরে পেতে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ভূধর সরকারসহ শতাধিক ব্যক্তি গত বছরের ১৮ অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, র্যাব- ৬ ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্রে প্রাননাথ দাশ, তার ভাই বিশ্বনাথ দাশ ও স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস যাতে গ্রাহকদের বিপুল পরিমান টাকা বিদেশে পাঠিয়ে নিজেরা পালাতে না পারে সেজন্য তাদের পাসপোর্ট জব্দ করার আবেদন করা হয়।
এরপরও কতিপয় গ্রাহক টাকা পাওয়ার দাবিতে গত ১৮ ডিসেম্বর প্রাণনাথের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।তবে ২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সপরিবারে সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায় প্রাণনাথ।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.