নিজস্ব প্রতিবেদক : আনসার আল ইসলামের সংগঠক মুন্সি ইকবাল আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র্যাব। তিনি আলোচিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজিবি) প্রধান মুফতি হান্নানের ভাই।
মুন্সি ইকবাল, তার ভাই মুফতি হান্নানসহ জঙ্গিরা ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে তিনজনের মৃত্যু হয়।
র্যাবের ভাষ্য, আলোচিত সেই মামলার পর থেকে গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে (আফগানিস্তান) পলাতক থেকে প্রশিক্ষণসহ নতুন নতুন কৌশল রপ্ত করে ইকবাল।
বৃহস্পতিবার রাতে সাভার থানাধীন রাজাসন এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে মুন্সি ইকবালকে গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্স র্যাব। উদ্ধার করা হয় উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত মোবাইল, বই ও লিফলেট।
পাকিস্তানি ও আফগান জঙ্গিদের কায়দায় খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটিয়েছিলেন মুফতি আবদুল হান্নান। বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালিয়ে এ দেশে গণহারে মানুষ খুনের সূচনা করেছিল হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী-বাংলাদেশ (হুজিবি)। এই কর্মকাণ্ডের মূল পরিকল্পনায় ছিলেন এই জঙ্গি নেতা।
তার পরিকল্পনায় ছয় বছরে ১৬টি হামলা হয়। এসব হামলায় নিহত হন ১১১ জন। এর মধ্যে একটি হামলা ও দুটি হামলাচেষ্টার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের এপ্রিলে মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।
র্যাব-৪ এর পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী জানান, গ্রেপ্তার ইকবাল নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা ছিলেন। পরে ২০০৪ সালের ২১ মে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে গ্রেনেড হামলার ঘটনার পর তাদের উপর গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির কারণে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে কাজ শুরু করে। বর্তমানে ইকবাল আনসার আল ইসলামের অন্যতম সংগঠক। এ কারণে তিনি সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে আসছিলেন। তার মোবাইল থেকে এ ধরনের বিভিন্ন উগ্রবাদী কথোপকথনের ও প্রচার-প্রচারণার প্রমাণ পাওয়া গেছে। জঙ্গি ইকবাল বেশ কয়েকবছর ধরে আনসার আল ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে।
যেভাবে জঙ্গিবাদে ইকবাল
জঙ্গি মুন্সি ইকবাল আহমেদের বাড়ি গোপালগঞ্জে। স্থানীয় একটি কলেজে এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। পরে ঢাকার সাভার এলাকায় বসবাস শুরু করেন। হান্নান পরিবারের ১০ ভাই-বোনের মধ্যে ইকবাল তৃতীয়। ২০১৭ সালের এপ্রিলে হুজবির প্রধান মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়। তাঁর আরও দুই ভাই মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত।
জঙ্গি ইকবালের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাস ও নাশকতা সংশ্লিষ্ট চারটি মামলা রয়েছে। এছাড়া সাভার থানায় আরও একটি সন্ত্রাস ও নাশকতা আইনে মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.