আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় জেসমিন আরা খাতুন নামে এক পরিবার কল্যান সহকারী বিনা ছুটিতে ২১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি পরিবার কল্যান সহকারী হিসেবে কাপাশহাটিয়া ২/খ ইউনিটে কর্মরত আছেন।
এদিকে বিনা ছুটিতে ও দাপ্তরীক অনাপত্তি নিয়ে ভারতে গমন করার কথা নিজেই ফাঁস করে বিপাকে পড়েছেন জেসমিন। এ ঘটনা নিয়ে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের পর জেসমিন ও তার স্বজনরা তদন্ত কর্মকর্তা ডাঃ তানিয়া আক্তার তৃপ্তিকে মোবাইল ফোনে কেটে ফেলার হুমকী দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নাছরিন জানান, গত বছরের ডিসেম্বর জেসমিন আরা আমার কাছে ছুটির জন্য আসেন। কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন হওয়ায় তার ছুটি প্রদানের কোন বিধান ছিল না। এরপর তিনি কোন আবেদন ছাড়াই ২১দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি দুটি পাক্ষিক সভায় অংশ গ্রহন করেনি এবং এক মাসে তার মাসিক রিপোর্টও দেননি। বিষয়টি কাপাশহাটিয়া ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ফিল্ড ভিজিট করে প্রতিবেদন দিলে তাকেও মুঠোফোনে ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে হুমকী প্রদান করেন জেসমিন এবং তার স্বামী জাহিদ। এরপর শুনি তিনি আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে ছুটি নিয়ে ভারতে গেছেন বলেও পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। কিন্তু হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার হোসেন জেসমিনকে ভারতে যাবার জন্য কোন ছুটি দেন বলে তাকে (নাছরিনকে) জানিয়েছেন।
নাছরিন আরো জানান পুরো বিষয়টি আমি উধ্বর্তন কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর জেসমিন ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডে আসেন। একজন সিনিয়র স্টাফ নার্সের উপস্থিতিতে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে চাইলে তিনি রাজি হননি। তবে তিনি রোগের লক্ষন বর্ননায় বলেছেন, তার স্তনে তীব্র জ্বালাপোড়া হচ্ছে, কিন্তু কোন প্রকার টিউমার জাতীয় রোগের কথা উল্লেখ করননি এবং এ সংক্রান্ত কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকেও দেখাননি। এ অবস্থায় জেসমিনকে দেশের মধ্যে কোন স্তন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের তত্বাবধানে গঠিত মেডিকেল বোর্ড। মেডিকেল বোর্ডে সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ, জুনিয়র কনঃ ডাঃ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফারজানা ইয়াসমিন। বিষয়টি ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস গত বছরের ১০ অক্টোবর ১৮৫৪ নং স্মারকে উপ-পরিচালক, ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে জানানো হয়।
পরিবার কল্যান সহকারী জেসমিন আরা জানান, ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে আমি অসুস্থ। তখন থেকেই ছুটি চাচ্ছি কিন্তু দেয়নি। আমি একজন ক্যান্সার রোগী। দয়া করে যদি পারেন, আপনারা আমার জন্য ছুটির ব্যবস্থা করুন, যাতে আমি দ্রæত চিকিৎসা হতে পারি। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যা হচ্ছে সবই অপপ্রচার। আমি কারো হুমকী দেয়নি। আমি সবার কাছে ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডাঃ মোজাম্মেল হক জানান, তার দপ্তরে জেসমিনের কোন ছুটির আবেদন নেই। তবে ঢালাও ভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে জেসমিনের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.