খুলনা বিভাগ, জেলার খবর, যশোর | তারিখঃ জানুয়ারি ২২, ২০২৪ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 4361 বার
নওরোজ আফরিন।। শৈত্য প্রবাহে জবুথবু অবস্থা যশোরের সীমান্তঞ্চলের মানুষের। চরম বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। তাই শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে যশোরের সীমান্তঞ্চলের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের কম দামী কাপড়ের দোকানে।
যশোরের শার্শা উপজেলার ছোট-বড় শপিংমল ও ফুটপাতে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। শিশু ও বয়স্কদের কাপড় কেনার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে শপিংমলগুলোতে দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ ঝুঁকছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
উপজেলার বেনাপোল, নাভারন, শার্শা, বাগআচড়ার হাট-বাজারে ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেড়েছে কেনা-বেচা। তবে দাম চড়া হওয়ায় শীতবস্ত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন দরিদ্র মানুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে তাদের বেচা-কেনা। এ বছর আগে ভাগেই ক্রেতার ভিড় বাড়ায় বিক্রেতারা বেশ খুশি।
নাভারন নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতের ওপর পুরাতন কাপড়ের স্তুপ সাজিয়ে বসে আছেন দোকানি হাফিজুর রহমান।
ফুটপাতের এই দোকানি হাফিজুর রহমান বলেন, পুরাতন কাপড়ের মধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর, কোর্ট, মাফলার, হাত মোজা ও পা মোজা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কম মূল্যের নতুন কাপড়ও তিনি বিক্রি করেন। কৃষক, দিনমজুর, বন্দর শ্রমিক,নির্মাণ শ্রমিক, রিকশা-ভ্যান চালকরাই বেশি আসেন। এছাড়াও মধ্যম ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষও আসেন।
বুলবুল মিয়া নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়ে গেছে। আমরাও চাহিদা মতো কাপড় রাখার চেষ্টা করছি। তবে এ বছর দোকানে উপচেপড়া ভিড় থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন।
নাভারন বড় মসজিদের সামনের ফুটপাত থেকে একটি পুরাতন জ্যাকেট কিনে ফিরছিলেন বেনাপোলের রাজাপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার।
তিনি বলেন, ‘কুয়াশার ভেতরে ভোরবেলায় ইজিবাইক নিয়ে বের হই। শীতে একেবারে কাহিল হয়ে যাই। ভাবছিলাম দেড় থেকে দুইশোর মধ্যে একটা জ্যাকেট কিনব। এসে দেখি দাম বেশি। শীতের মধ্যেও কাজ করাই লাগবে। তাই ৩০০ টাকা দিয়ে জ্যাকেটটা কিনেছি।’
বন্দর শ্রমিক আব্দুস সেলিম বলেন, ‘মেয়ের জন্য একটা সোয়েটার কিনেছি। আর আমার জন্য একটা জাম্পার কিনব।ঘুরেফিরে দেখছি। এখনও পছন্দ মত হয়নি।’
একজন শিক্ষক দম্পতি এসেছেন ছোট ছেলের জন্য জ্যাকেট কিনতে। নাভারন নিউমার্কেটে কথা হয় তাদের সাথে।
কামরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ছেলের শীতের কাপড় কিনেছি।একটি জাম্পার, একটি মাফলার ও একটি হাতমোজা কিনলাম। দাম অন্যান্য বারের চাইতে এবার একটু বেশি।
বাগআচড়া ফুটপাতে ভ্যানচালক মোসলেম আলি, কৃষক আব্দুল আজিজ, দিনমজুর অহেদ আলিসহ অনেকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
আব্দুল আজিজ বলেন, শপিংমল ও শোরুমে সুন্দর সুন্দর কাপড় রয়েছে তবে তার দাম আমাদের সামর্থ্যের বাইরে।এজন্য ফুটপাতের দোকানে আছি। এখানে পুরাতন কাপড়ও মেলে-সেই সঙ্গে কিছু কিছু সুন্দর নতুন কাপড়ও পাওয়া যায়।
বাগআচড়া বাজারের ফুটপাতের দোকানি জালাল মিয়া বলেন, এখানে দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষই বেশি আসেন। তবে কিছু মধ্যবিত্তও বর্তমানে আমাদের কাছে আসছেন।
বেনাপোলের লালমিয়া সুপার মার্কেটের ‘আর ফ্যাশন কর্নারের’ মালিক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে গরম কাপড়ের বেচাবিক্রি জমজমাট হয়ে উঠেছে। বেচাবিক্রি মোটামুটি ভাল। শীত যত বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড় তত বাড়ছে।”