আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ স্কুলের অস্তিত্ব নেই, অথচ নিয়োগ হয়েছে প্রধান শিক্ষক। এমন এক অবিশ্বাস্য ভৌতিক ও জালিয়াতিপুর্ন নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে হরিণাকুন্ডু উপজেলায়। এ নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। স্কুলই প্রতিষ্ঠা হয়নি অথচ অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে দিব্যি চাকরী করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী নামে এক শিক্ষক। তিনি হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর পশ্চিমপাড়ার আসমত বিশ্বাসের মেয়ে।
দূর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর একটি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। তিন বছর পর ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। অথচ স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছর আগে ২০০৭ সালে একটি জালিয়াতিপুর্ন নিয়োগ নিয়ে চাকরী করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী। নিয়মিত তিনি স্কুলের ক্লাস নিচ্ছেন, কোন বাধা ছাড়াই তুলছেন সরকারী বেতন ভাতা। লিখিত অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় শাহনাজ পারভীন শেফালীর বয়স ছিল ৩২ বছর। ফলে এ সময়ে তার চাকরী হওয়ার কথা নয়। তার জন্ম তারিখ ২৪/০৭/১৯৭৮। অভিযোগে বলা হয়েছে, বয়স জালিয়াতি করার জন্যই শাহনাজ পারভীন শেফালী স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছরের আগের ভুয়া নিয়োগ ও রেজুলেশন দেখাচ্ছেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, স্কুলে রেজিষ্ট্রি হয় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর। ওই তারিখেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা দেখানো হয়। স্কুলের শিক্ষকদের যোগদানের তারিখ যথাক্রমে ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর ও ২০১১ সালের ৪ সেপ্টম্বর। ফলে ২০০৭ সালের নিয়োগ সম্পুর্ন অগ্রহনযোগ্য। স্কুলটির তৎকালীন সভাপতি দেখানো হয়েছে নুরো। কিন্তু ওই গ্রামে নুরুল ইসলাম জর্দ্দার নামে এক ব্যক্তি আছেন।
তিনি জানান, ২০০৭ সালে চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় সরকারী বা বেসরকারী স্কুলের কোন অস্তিত্ব ছিল না। তাছাড়া শিক্ষক নিয়োগ তো দুরের কথা, আমি কোনদিন স্কুলের সভাপতি ছিলাম না। তিনি আরো জানান, ২০১০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করার পর ফজলুর রহমান মালিতাকে সভাপতি করা হয় এবং তিনিই শিক্ষক নিয়োগ দেন।
এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের খবর নিশ্চত করে জানান, চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীন শেফালীর বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত করে কাগজপত্র বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও তিনি জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.