ঢাকা অফিস : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ'লীগ কার্যালয়ে নির্বাচনী আমেজ, অন্যদিকে বিএনপি কার্যালয়ে তালা।
শনিবার সকাল ১০টা। নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান দুই গেটে ঝুলছে দুইটি তালা। সামনের দুই পাশে দাঁড়িয়ে ২০জন পুলিশ সদস্য। আশপাশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।
সুনসান নিরবতার মধ্যে অতন্ত্র প্রহরীর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানান, এই অফিসে কেউই আসেন না। প্রতিদিনই সাংবাদিকরা আসেন তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা কেউই আসেন না। পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে ডিউটি করছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর থেকেই পাল্টে গেছে রাজনৈতিক অঙ্গনের চিত্র। নির্বাচনি তফসিল ঘোষনার পর রাজনৈতিক সংগঠনগুলোতে উত্তাপ বিরাজ করছে।
সকাল থেকেই ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে যখন নির্বাচনি আমেজ বইছে, ঠিক সেই মুহুর্তে বিপরীত চিত্র নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ে। সেখানে ঝুলছে তালা। গেটের ফাকা অংশ দিয়ে ভিতরে তাকাতে দেখা যায়, ভবনটির ভিতরে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে আসবাবপত্র। পশ্চিম পাশের গেটের ভেতরে একটি চেয়ারে ঝুলিয়ে রাখা আছে নির্বাচন কমিশনের আলোচনায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো সেই চিঠি। যা ২ নভেম্বর বিএনপি কার্যালয়ে ফেলে রেখে যায় ইসি। সেদিনও কার্যালয়টি তালাবদ্ধ ছিল।
ফটকের ভেতরের অংশে একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে ধুলোমাখা অবস্থায় পড়ে আছে চিঠিটি, এর সাথে আরও অনেকগুলো চিঠির খাম পরে থাকতে দেখা গেছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই চিঠিগুলো এখন পর্যন্ত কেউ খোলেননি।
কিছুদিন আগেও সেখানে ‘ডু নট ক্রস, ক্রাইম সিন’ লেখা ব্যারিকেট ছিল। তবে শনিবার সকাল গিয়ে সেই বেড়িকেটটি দেখা যায়নি। সরেজমিনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিএনপির কোন নেতাকর্মীদের সেখানে দেখতে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিদিনের মতই সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ছিল।
বিএনপি কার্যালয়ের পাশে থাকা চা বিক্রেতা জসিম জানান, বিএনপির পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির দিন গত বুধবার সকালে দলীয় এই কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন কর্মী জড়ো হয়ে স্লোগান দিলে পল্টন থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এরপর পর থেকেই নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়টিতে দলীয় আর কাউকেই আসতে দেখা যায়নি।
আশপাশের হকার ও দোকানদাররা জানান, বিএনপি অফিস বন্ধ থাকায় লোকজন আসেনা। আর এতে তাদের বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। পুলিশ দিনরাত এখানে পাহাড়া দিচ্ছে, এতে ভয়ে পথচারিরাও দাড়ায় না পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে মানুষজন আসতো, বেচাবিক্রি হইতো।
এদিকে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশ তালা লাগায়নি। বিএনপির নেতাকর্মীদের অফিস করতে বাধা নেই।
দুপুরে কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত পুলিশের এসআই আ: রাজ্জাক জানান, সকাল থেকে বিএনপির কেউই এখানে আসেননি। আমরা সার্বিকভাবে নিরাপত্তার কাজে এখানে ডিউটি করছি। জনগনের জানমালের নিরাপত্তা এবং সকল ধরনের অপত্তিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সজাগ রয়েছে। তবে বিনা অপরাধে কাউকে গ্রেপ্তার করতে এখানে পুলিশ অবস্থান নেননি বলেও জানান তিনি।
এদিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দিকে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। আশপাশে খোঁজ নিয়া জানা গেছে এই কার্যালয়টিতে নেরাকর্মীরা কেউই তেমন আসছেন না।
ভবনটির পশ্চিম পাশের ছোট গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই ভিতর থেকে বের হয়ে আসেন অফিসের দায়িত্বে থাকা আসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখানে নেতা কর্মীরা কেউই আসেনি। বনানী অফিসে সবাই আছেন সেখানে গেলে সবাইকে পাওয়া যায়।
এদিকে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি চলছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা কর্মীরা জড়ো হচ্ছেন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। এক কথায় সেখানে নির্বাচনী উৎসব চলছে। এতে করে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে তীব্র যানযট।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.