আশরাফুজ্জামান বাবু, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটের সামনে অবস্থিত এসএস ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপচিকিৎসা এবং প্রতারণার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগীরা। বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ধারাবাহিক ভাবে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর হামলা, মামলা আর হয়রানির ভয়ে এতদিন মুখ না খুললেও এবার ভুক্তভোগী গন তাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিতে শুরু করেছেন ডি এইচ এম এস ডিগ্রীধারী কথিত ডাক্তার সোনিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে।
ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বলেন, বছর খানিক আগে আমার বড় মেয়ে মুমতাহিনা তন্বীর (২৩) সিজারিয়ান অপারেশন করানোর জন্য এসএস ক্লিনিকে ভর্তি করে ছিলাম। সেখানে আমাদের সাথে কোনো পরামর্শ না করেই সিজার করতে গিয়ে তারা আমার মেয়ের সন্তানের নাড়ি কেটে ফেলে। এটা নিয়ে প্রতিবাদ করলে ক্লিনিক থেকে বলা হয় সন্তানের নাড়ি কেটে না ফেললে রুগীকে বাঁচানো যেতোনা। তিনি আরও বলেন, সিজারের এক সপ্তাহ আগেও আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে এসংক্রান্ত কোনো জটিলতা আমার মেয়ের ছিলনা। আমার মেয়েটি ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে আর কোনোদিন মা হতে পারবেনা। ঝিকরগাছা বাজারের প্রসিদ্ধ নুর হোটেলের স্বত্বাধিকারী নুর ইসলাম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। মারা যাওয়ার কিছুদিন পূর্বে ডাক্তার তার রক্তের হিমোগ্লোবিন পরীক্ষার জন্য বলেন। তখন তার স্ত্রী এবং পুত্র রক্ত পরীক্ষার জন্য তাকে এসএস ক্লিনিকে নিয়ে যান। নুর ইসলামের পুত্র অনিক হোসেন বলেন, আমার আব্বার অবস্থা খারাপ ছিল। এস এস ক্লিনিক থেকে রক্ত পরীক্ষা করালে তারা রিপোর্ট দেয় আমার আব্বার শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমান ১৯ পয়েন্ট। অথচ চিকিৎসা শাস্ত্র মতে পৃথিবীর কোনো পুরুষের হিমোগ্লোবিন ১৭.৫ এর বেশি হতে পারে না। যখন এই রিপোর্টের ভুল ধরা পড়ে তখন এসএস ক্লিনিক থেকে বলা হয় প্রিন্টে ভুল হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়াতে এসএস ক্লিনিকের বিরুদ্ধে প্রকাশিত রিপোর্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে অনেকেই এই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কমেন্ট করেছেন। রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজলেহা পারভীন লেখেন, আমি আমার বাড়ির কাজের মহিলার মেয়েকে সিজার করতে ওখানে নিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু তাদের ব্যবহার ভালো ছিল না। মামুন হাসান চৌধুরী নামের একজন লিখেছেন, এখানে সব দুনম্বরী কাজকর্ম হয়, মানুষকে হয়রানি করা হয়। এর সাথে হাসপাতালের কিছু লোক জড়িত। এমডি রাসেল বিশ্বাস নামে একজন লিখেছেন, আমরাও প্রতারণার শিকার হয়েছি। তবে তিনি কি ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন সেটা লেখেননি। মহসীন রেজা চৌধুরী নামের একজন লিখেছেন, তার (ক্লিনিকের পরিচালক কথিত ডাক্তার সোনিয়া) পাতা ফাঁদে ফেলে বহু মানুষকে ধ্বংস করে দিয়েছে, সে প্রথম শ্রেণির একজন প্রতারক। সাধারণ রুগীদের কথার ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে।
এদিকে এসএস ক্লিনিক নিয়ে একের পর এক তথ্যবহুল রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার সুশীল সমাজ। ক্লিনিকের পরিচালক কথিত ডাঃ সোনিয়া আক্তারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে গেলে তার ফোনে বন্ধ পাওয়া গেছে।
যশোর জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমি ঢাকাতে একটা প্রশিক্ষণে আছি। সেখান থেকে ফিরে এসে বিষয়টি দেখবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.