আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লিবিয়ার দেরনা বন্দর নগরীতে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১১,০০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিখোঁজ হাজার হাজার লোকের সন্ধানে শুক্রবার জরুরি বিভাগ গুলো তাদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
পানির প্রচন্ড ঢেউ রোববার শেষ দিকে দু’টি উজানের বাঁধ ভেঙে দেরনাকে একটি বর্জ্যভূমিতে পরিণত করেছে। পুরো শহরের বাঁধ এবং অসংখ্য মানুষ ভূমধ্যসাগরে ভেসে গেছে। খবর এএফপি’র।

এএফপি’র এক ফটোগ্রাফার বলেছেন, নদীর দু’পাশের আশপাশের এলাকাগুলো বছরের এই সময় সাধারণত শুকিয়ে যায়। ওই এলাকাগুলো দেখে মনে হচ্ছে যেন স্টিম রোলার ওই এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে চলে গেছে। গাছ ও বিল্ডিং উপড়ে ফেলেছে। বন্দরের পানির প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাতে যানবাহনগুলোকে এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে।

বেনগাজি মেডিকেল সেন্টার প্রকাশিত এক বিবরণে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি হাসপাতালের বিছানা থেকে বলেন, আমরা চতুর্থ তলায় পৌঁছানোর সময় দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত পানি ছিল।

তিনি বলেন, জানালা দিয়ে লোকজনের চিৎকার ভেসে আসছিল। গাড়ি ও মৃতদেহগুলোকে পানিতে ভেসে যেতে দেখতে পাই।

শতাধিক লাশের ব্যাগ এখন দেরনার কাদামাখা রাস্তায় সারিবদ্ধ অবস্থায় গণ দাফনের অপেক্ষায় পড়ে আছে। আতঙ্কিত ও শোকাহত বাসিন্দারা নিখোঁজ প্রিয়জনদের বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান করছে। বালির পাহাড়ের ধ্বংসাবশেষ বুলডোজার দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে।

এএফপি’র একজন সংবাদদাতা জানান, একটি বিধ্বস্ত বাড়িতে একটি উদ্ধারকারী দল পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পর এক নারীর নিষ্প্রাণ হাত তার মৃত সন্তানকে আঁকড়ে ধরে রাখতে দেখা যায়।
বন্যার পানি আকস্মিক আঘাত হানার সময় দেরনায় একটি দল নিয়ে অবস্থানরত রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির লিবিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ইয়ান ফ্রিডেজ বলেন, বিপর্যয়টি ছিল হিং¯্র ও নৃশংস।

‘সাত মিটার (২৩ ফুট) উঁচু একটি ঢেউ বিল্ডিংগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে এবং অবকাঠামো সমুদ্রে ভেসে গেছে। পরিবারের সদস্যরা এখন নিখোঁজ। মরদেহ তীরে ভেসে আসছে। বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।’
সূত্র: বাসস