দিনাজপুর প্রতিনিধি : দাম না পাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর চামড়া ভাসছে বৃষ্টির পানিতে। ফেলে দেওয়া হচ্ছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে। চামড়ার কোনো দাম না থাকায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। গরুর চামড়া অল্প দামে বিক্রি হলেও ছাগলের চামড়া কেনেনি কেউ। আর বৃষ্টির কারণে গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা নিয়ে চরম বিপাকে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। ফেলে দেওয়া ছাগলের চামড়া পৌরভার ময়লার গাড়ি তুলে নিয়ে তা ভাগাড়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার বিকালে দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী রামনগর চামড়া বাজারে গিয়ে এমনি দৃশ্য দেখা গেছে।

স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন জানান, ‘আগে আমরা কোরবানি দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া কেনার প্রতিযোগিতা করতাম। কিন্তু,এবার গুটি কয়েকজন এ কাজ করেছে। ক্রেতা না পাওয়ায় পশু কোরবানির অনেকে চামড়া দিয়ে দিয়েছে,মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। এসব প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা আমাদের চামড়া এনে দিয়েছে। এবার গরুর চামড়া কিনেছি সর্বোচ্চ ৩০০ এবং সর্বনিম্ন ১০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া ফ্রিতেও কেউ নেয়নি। এতে ছাগল এবং ছোট ছোট গরুর অনেক চামড়াই ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছে সাধারণ মানুষ। ঈদের দিন বিকেল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় ড্রেন, নর্দমার পানিতে চামড়া ভাসছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।’ অন্যদিক বৃষ্টিতে চামড়ায় লবণ লাগানো নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। ছাগলের চামড়া ফেলে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। রামনগর চামড়া বাজার এলাকায় রাস্তায় পড়ে আছে হাজার হাজার ছাগলের চামড়া। বিশেষ করে রাত ও সকালের দিকে ভারী বর্ষণ হওয়ায় ছাগলের চামড়াগুলো রাস্তায় বৃষ্টির পানিতে ভাসতে দেখা যায়।

রামনগর বাজারে ছাগলের চামড়া নিয়ে আসা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান. তিনি ৮০টি ছাগলের চামড়া নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কেউ এক টাকাও দাম বলছে না। তাই তিনি চামড়া ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন।

দিনাজপুর পৌরসভার ময়লা পরিবহন ট্রাকের গাড়িচালক আমানুল্লাহ হাসান নয়ন বলেন, রামনগর মোড় ফেলে যাওয়া ছাগলে চামড়া ট্রাকে করে তুলে নিয়ে মাতাসাগর মলার ভাগাড়ে ফেলছেন। তিনি পাঁচ গাড়ি ছাগলের চামড়া ভাগাড়ে ফেলেছেন। আরো ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

চামড়া ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী জানালেন, চামড়ার ব্যবসা এমনিতেই খারাপ। চামড়া নিয়ে এমনিতেই বিপদে আছি, আবার বৃষ্টি। শ্রমিকরা কাজ করছে না, ঈদে মানবিক কারণে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করতেও বলা যাচ্ছে না। বেশকিছু চামড়া রাস্তার ধারে পড়ে আছে। জানি না চামড়াগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করতে পারবো কি না। এনিয়ে দুচিন্তায় আছি।