আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিদিনের খারাপ অভ্যাস মানুষের মস্তিষ্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও ফেলে। সম্প্রতি এক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের নিউরোলজির অধ্যাপক রুডলফ ই তানজি মানুষের মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর কয়েকটি অভ্যাসের কথা জানিয়েছেন।
এগুলোর ভেতর মস্তিষ্কের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর হিসেবে তিনি দিনে ৮ ঘণ্টা কাজকে দায়ী করেছেন। এই নিউরোজলজিস্ট জানিয়েছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো দিনে ৮ ঘণ্টা কাজকে সাধারণ নিয়মে বানিয়ে ফেললেও মানুষের মস্তিষ্কের জন্য এটি খুবই ক্ষতিকর। এর ফলে মানুষের বোধশক্তি কমে যায়। এর ফলে মানুষের মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে মানুষের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়।
অধ্যাপক রুডলফ বলেছেন, প্রতি ঘণ্টা পর পর ৫ মিনিট হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ ছাড়া সূর্যের আলোয় পর্যাপ্ত সময় থাকাটা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। এই নিউরোলজিস্ট বলছেন, একাকিত্ব মানুষের মানুষের উদ্বিগ্নতা ও হতাশা বাড়ায়। এটি মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা সংকুচিত করে। তাই রুডলফ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে মানুষের সাথে মেশার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলছেন, আপনাকে এমন কাউকে বেছে নিতে হবে, যে আপনার খেয়াল রাখবে এবং আপনি তার খেয়াল রাখবেন।
তিনি বলছেন, একাকিত্ব দূর করতে আপনি সময় নিয়ে আপনার পরিচিতজনদের সাথে ফোনে কথা বলতে পারেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মজা করার জন্য কিছু করার পরিকল্পনা করতে পারেন। এ ছাড়া আপনার পছন্দের সাথে মেলে এমন কোনো গ্রুপের সাথে যোগ দিতে পারেন। এতে আপনার মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
রুডলফ জানিয়েছেন, আমরা সাধারণত দিনে ৮ ঘণ্টা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কাজের পর অবসর সময়ে আবার টেলিভিশন দেখি বা ভিডিও গেম খেলে সময় পার করি। এই অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের বোধশক্তি আরও কমিয়ে দেয়। তিনি বলেছেন, দিনে ৮ ঘণ্টা কাজের পর মানুষের অন্তত ৬ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। পরের দিন মস্তিষ্কের কার্যাবলি স্বাভাবিক রাখতে এটি খুবই জরুরি। কম ঘুম মানুষের কাজের তীক্ষ্ণতা, সতর্কতা এবং মনোযোগ নষ্ট করে। তিনি ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে বিছানায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ঘুম আসার জন্য তিনি চোখ বন্ধ করে দুই মিনিট থাকার কথা বলেছেন। ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে তিনি নীল আলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমানে মানুষের ভেতর আরেকটি অভ্যাসের কথা উল্লেখ করেছেন এই নিউরোলজিস্ট। তিনি বলেছেন, আমরা এখন কে কার চেয়ে বেশি আগে কিছু অর্জন করব সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এর সঙ্গে অর্থ উপার্জন জড়িত। এটি ইদুরের দৌড় প্রতিযোগিতার মতো, যা আমাদের সব সময় এবং শক্তি কেড়ে নেয়। এটি আমাদের যৌবনকে আজীবনের জন্য কেড়ে নেয়।
তিনি বলছেন, যদিও বহুমুখী কাজ অর্থ উপার্জনের জন্য প্রয়োজন, তবে বাস্তবের দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। বহুমুখী কাজের ব্যস্ততা মানসিক চাপ বাড়ায়। রুডলফ বলেছেন, এমন কাজ করুন, যা আপনার জীবনকে সমৃদ্ধ করে। এর সাথে এমন একটি কাজ বেছে নিন, যা আপনার শখ পূরণের পাশাপাশি কিছু উপার্জনও হয়। সবশেষ এই নিউরোলজিস্ট মানসিক চাপ কমাতে ‘আমি ঠিক আছি’ এই বাক্যটি মাঝে মাঝে উচ্চারণের পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.