আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্ক সিরিয়ায় অভিযান চালিয়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) নেতা আবু হুসেইন আল-কুরাইশিকে হত্যা করেছে। গত শরতে আইএসের পূর্ববতী প্রধান আবু আল-হাসান আল-হাসেমি আল-কুরাইশি নিহত হওয়ার পর গোষ্ঠীটির দায়িত্ব নিয়েছিলেন আবু হুসেইন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আবু হুসেইন নিহত হওয়ার খবরটি ঘোষণা দেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিআরটি ট্রাকের কাছে এরদোয়ান দাবি করেন, শনিবার অভিযান চালিয়ে আইএসের এই নেতাকে হত্যা করে তুরস্কের এমআইটি গোয়েন্দা সংস্থা। তবে এই ব্যাপারে আইএসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

সোমবার (১ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের খবরে এই কথা বলা হয়। তবে বিবিসির পক্ষ থেকে এরদোয়ানের এই দাবির সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

এরদোয়ান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই কুরাইশির গতিবিধি নজরদারিতে রেখেছিল এমআইটি গোয়েন্দা সংস্থা। কোনো ধরনের বিভেদ ছাড়াই আমরা সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। তবে তিনি অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

এদিকে সিরিয়ান সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুরস্কের সীমান্তের কাছে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জানদারিসের এই অভিযান চালানো হয়।

গত নভেম্বরে জিহাদি এই গোষ্ঠীটি তাদের নেতা আবু আল-হাসান আল-হাসেমি আল-কুরাইশির মৃত্যুর কথা জানায়। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ২০২২ সালের মধ্য অক্টোবরে বিদ্রোহী ফ্রি সিরিয়ান আর্মির অভিযানে আবু আল-হাসান আল-হাসেমি নিহত হন।

এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্দুকযুদ্ধের পর আবু আল-হাসান আল-হাসেমিরও পূর্ববর্তী আইএস নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাসিমি আল-কুরাইশির আস্তানা ঘিরে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী। পরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পরিবারসহ প্রাণ হারান আবু ইব্রাহিম। তার মৃত্যুর পর আবু আল-হাসান আল-হাসেমি দায়িত্ব নেন। তিনি নিহত হওয়ার পরই আবু হুসেইন আল-কুরাইশি দায়িত্ব নিয়েছিলেন।

আবু ইব্রাহিম নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, মার্কিন সেনাদের অভিযান বিশ্বের প্রতি বড় ধরনের সন্ত্রাসী হুমকি প্রতিহত হয়েছে।

আইএস একসময় উত্তর-পূর্ব সিরিয়া থেকে উত্তর ইরাক পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের ৩৪ হাজার বর্গ মাইল এলাকা দখল করে ফেলে এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষের ওপর তাদের নৃশংস শাসন চাপিয়ে দেয়। ২০১৯ সালে আইএসের সর্বশেষ অবস্থান থেকে তাদের হটানো হয়। তবে জাতিসংঘ একই বছরের জুলাইয়ে সতর্ক করে বলেছিল, আইএস অব্যাহতভাবে হুমকিই রয়ে গেছে।

ধারণা করা হয়, সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের ৬ থেকে ১০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। তারা মূলত প্রত্যন্ত অঞ্চলে হুট-হাট হামলা চালিয়ে পালায়, অতর্কিত হামলা চালায় এবং রাস্তায় বোমা পুঁতে বিস্ফোরণ ঘটায়।

এছাড়া গোষ্ঠীটির আঞ্চলিক সহযোগীরা বিশ্বজুড়ে সংঘাত চলা অঞ্চলগুলোর জন্যও হুমকি। জাতিসংঘ বলেছে, আফগানিস্তান, সোমালিয়া এবং চাদের লেক অববাহিকায় আইএসের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সুপ্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্ক রয়েছে।