আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ বিয়ের আসর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সহকর্মীর মুক্তি দাবী করে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনায় উঠে এসেছেন ঝিনাইদহের নবদম্পত্তি মাহমুদুল ও সুমাইয়া। তাদের এই অভিনব প্রতিবাদের ভাষা এখন ‘টক অব দি’ কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। নেটিজেন ও ভুক্তভোগীরা বিয়ের আসরে তাদের এই ব্যতিক্রম প্রতিবাদকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে চলছে আলোচনা। আর ইউটিউবে তৈরী হচ্ছে ভিডিও।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি আবার ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক। সুমাইয়া আফরিন একই উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে। তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকার প্রফেসর কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আসরেই নবদিম্পত্তি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করে হৈ চৈ ফেলে দেন। মাহমুদুলের হাতে ‘ফ্রি খাদিজা’ ও সুমাইয়ার হাতে ‘এ্যবলিশ ডিএসএ’ লেখা প্লাকার্ড শোভা পায়। বিয়ের আসরেই অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানিয়ে মাহমুদুল-সুমাইয়া নতুন দাম্পত্য জীবন শুরুর পক্রিয়াকে অনেকেই ব্যতিক্রম বলে মনে করছেন। বিয়ের আসরে নবদম্পতির সহকর্মীরাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে সেদিন শ্লোগান দেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে বন্দি আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী খাদিজাতুল ইসলাম কুবরা। তার মুক্তির জন্যই মুলত বিয়ের আসরে প্লাকার্ড হাতে দাঁড়ান মাহমুদুল। অন্যদিকে নববধূ সুমাইয়ার হাতে ছিল ‘‘এ্যবলিশ ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট (ডিএসএ)’ লেখা প্লাকার্ড। বিষয়টি নিয়ে বর মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আট মাসের বেশি কারাবন্দি আমার রাজনৈতিক সহকর্মী খাদিজা। তিনি কারাগারে কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। অনেক চেষ্টা করেও তার জামিন হয়নি। তাই প্রতিবাদ হিসেবে আমরা বিয়ের আসরকে বেছে নিয়েছি। মাহমুদুলের মা দিলরুবা খাতুন বলেন, ‘রাজনৈতিক সহকর্মীর মুক্তির দাবিতে ছেলে ও তার বন্ধুরা এ প্রতিবাদের আয়োজন করে। আমরা মৌন সমর্থন দিয়েছি।’ কনে সুমাইয়ার বাবা খলিলুর রহমান বলেন, ‘মেয়ে ও তার স্বামী বিয়ের আসরে কী করেছে, তা আমরা জানি না।

এদিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিয়ের আসরে নবদম্পতির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রতিবাদ বিষয়ে তাঁর জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান।