ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব হলো এই দেশের জনগন যাতে স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচে ন্যায় বিচার লাভ করেন। এই রাষ্ট্রের মালিক ১৭ কোটি মানুষ। এই ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৪ কোটি মানুষ নিত্যদিন আদালত চত্বরে আসেন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়। যেহেতু এই রাষ্ট্রের মালিক জনগন, সেহেতু মানুষ যাতে আদালতে এসে স্বঃস্বিতে বসতে পারেন, তারা যাতে বুঝতে পারেন এই জায়গাটি তাদের। সেই জন্য প্রায় প্রতিটি জেলায় বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগার নির্মান করা হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ আদালত প্রাঙ্গনে “ন্যায়কুঞ্জ” উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আদালতগুলোতে যে মামলা জট সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রæত ছাড়াতে বিচারকগনকে বলা হয়েছে, যাতে মানুষ ন্যায় বিচার পান। এদিকে ঝিনাইদহ আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারের নামে কোন বিচারক যদি অবিচার করেন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বিচার বিভাগের কেউ দুর্নীতি করলে তাকে রাখা হবে না। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি একটা ক্যান্সার। আমার হাতে পাঁচটা আঙ্গুল আছে। যদি একটি আঙ্গুলে ক্যান্সার হয় তাহলে বড় চিকিৎসা হচ্ছে সেটা কেটে ফেলা। তাই যে জজ বিচার বিক্রি করবে, সেই জজের আঙ্গুল কেটে ফেলতে আমি একটুও দ্বিধাবোধ করবো না। একজন জজ যদি বিচারের মাধ্যমে একজনের সম্পদ অন্যজনের দিয়ে দেন, তাহলে সে ডাকাতের চেয়েও খারাপ। তিনি বলেন, এমন অন্যায়ের জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। যদি কোন জজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পান, জানালে সাথে সাথে আমি ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তিনি বলেন, ঝিনাইদহের বিষয়খালীর যুদ্ধ ইতিহাসের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ যা আমরা ভুলতে পারব না। ১৯৭১ সালে বিষয়খালী ব্রিজের এইপাশে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছিলেন। আর অপরপাশে ছিল পাকিস্তানী বাহিনী। সেখানে দির্ঘ সময় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়েছিল যা আমাদের ভুলবার নয়। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড রবিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার তোফায়েল হাসান, জেলা প্রশাসক এস.এম রফিকুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা জজ নাজিমুদৌলা, পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকিদুল ইসলাম, সরকারি কৌশুলী বিকাশ কুমার ঘোষ ও পিপি অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন বিচারাঙ্গনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।