সাঈদ ইবনে হানিফ ঃ তীব্র তাপদহের কারণে ধানগাছে দেখা দিতে পারে হিটস্ট্রোক জনিত সমস্যা । এবিষয়ে কৃষকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা গন । সম্প্রতি আবহাওয়ার এমন খবরে ভাবিয়ে তুলেছে যশোরের বাঘারপাড়া সহ আশপাশের অঞ্চলের কৃষকদের। আবহাওয়া বার্তা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দেশে চলছে তীব্র তাপদাহ যা আগামী ৪-৫ দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এ সময় দিনের তাপমাত্রা ৩৫-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এমনকি এর বেশিও বিরাজ করতে পারে।
এজন্য বোরো ধানের চাষিদের নিম্মলিখিত পরামর্শ গুলো বিবেচনায় রাখা জরুরি বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তা গন। এবিষয়ে যশোরের বাঘারপাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ করিম খান বলেন, অন্যান্য অঞ্চলের থেকে তার এলাকায় যেসব জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগ জমি উচু এজন্য এইসব জমিতে ঠিকমতো পানি ধরে রাখা কঠিন। তীব্র তাপদহের কারণে এসব উচু জমির বোরো ধানের ক্ষেত গুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে তার এলাকায় বোরো ধানের ক্ষেত গুলো পরিপূর্ণ রুপ নিয়েছে। কিছু কিছু কৃষকের ক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণের পাশাপাশি নতুন করে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ, যে বিষয়ে প্রতিকারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া তীব্র গরম আবহাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তীব্র তাপদহ বেশিদিন অব্যাহত থাকলে ধানক্ষেত গুলোতে হিটশক বা হিটস্ট্রোক দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে যারা উচু জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন সেসব কৃষকদের একটু বারতি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
বৃষ্টিহীন গরম ঝড়ো বাতাসে দেশের অনেক জায়গায়ই ফুল আসা ধান হিট শক/হিট ইনজুরিতে পড়ে চিটা বা শিষ সাদা হয়ে যেতে পারে। এ সময় বোরো ধানের যে সকল জাত ফুল ফোটা পর্যায়ে আছে বা এখন ফুল ফুটছে বা সামনে ফুল ফুটবে সে সকল জমিতে পানি ধরে রেখে ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে হিট শক/ হিট ইনজুরি থেকে রক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দিনের তাপমাত্রা হলো ৩৫° সেলসিয়াস বা তার বেশি। ফুল ফোটার সময় (সকাল ৭.০০ টা থেকে ১১.৩০ টা পর্যন্ত) যদি ১-২ ঘণ্টা ঐ তাপমাত্রা বিরাজ করে তাহলে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস বা গরম বাতাসের কারণে গাছ থেকে পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায়। এতে ফুলের অঙ্গগুলোর গঠন বাধাগ্রস্ত হয়। আবার ঝড়ো বাতাস পরাগায়ন, গর্ভধারণ ও ধানের মধ্যে চালের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। এতে ধানের সবুজ খোসা খয়েরি বা কালো রঙ ধারণ করে। ফলে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত খরার কারণে শিষের শাখা বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং বিকৃত ও বন্ধ্যা ধানের জন্ম দেয়ায় চিটা হয়ে যায়। এমন অবস্থায় কৃষকদের করনীয় হলো -
প্রচণ্ড গরম ও ঝড়ো বাতাসের কারণে কোথাও ধান চিটা হতে দেখা গেলে-জমিতে ৫-৭ সে.মি. বা ২-৩ ইঞ্চি পানি কাইচ থোড় থেকে ফুল ফোঁটা পর্যন্ত জমিয়ে রাখা জরুরি।
অপর দিকে এমওপি সার ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতাংশ হিসেবে স্প্রে করা যেতে পারে। অথবা বিঘা প্রতি ৫ কেজি হিসেবে দানাদার এমওপি সার উপরিপ্রয়োগ করা যেতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.