ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার ও পুর্ব শত্রæতার জের ধরে খুন করা হয় ইজিবাইক চালক রবিউল ইসলামকে।
শুক্রবার বিকালে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু শহরের “একতারা” মোড়ে কুপিয়ে জখম করার পর রাত ১০টার দিকে রবিউল ইসলাম মারা যান। তিনি হরিণাকুন্ডু পৌর এলাকার জোড়া পুকুরিয়া গ্রামের মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে। রবিউল হত্যার পর প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। উত্তেজনা প্রশমনে গ্রামটিতে অরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের সাইফুল কমিশনার ও আক্কাচ আলীর দুইটি গ্রæপ রয়েছে। সামাজিক এই গ্রæপে আওয়ামীলীগ ছাড়াও বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন রয়েছে। গ্রামবাসির ভাষ্যমতে ২০২১ সালে হরিণাকুন্ডু পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ’লীগ নেতা আক্কাচ আলীকে কুপিয়ে জখম করে সাইফুল কমিশনার গ্রæপের লোকজন। এই হামলায় আক্কাচ আলী চিরতরে পঙ্গু ও বধির হয়ে যান। ওই সময় হামলার নেতৃত্ব দেন শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত রবিউল ইসলাম। তিনি আক্কাচ আলীকে কোপানো মামলার প্রধান আসামীও। পঙ্গু আক্কাচ আলীর ছেলে পলাশ এখন হরিণাকুন্ডু পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি। অনেকের ধারণা পিতার উপর বর্বরতম হামলার প্রতিশোধ নিতেই রবিউলকে খুন করা হয়েছে। যদিও এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা পলাশ।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, শুক্রবারের হরিণাকুন্ডু শহরের একতারা মোড়ে হামলার সময় কিশোর গ্যাং ও বেশির ভাগ স্কুল কলেজে পড়া ছাত্ররাই অংশ নেয়। হামলাকারীরা সবাই ছাত্রলীগ নেতা পলাশের সঙ্গে থাকেন বলে অভিযোগ। এদিকে সাইফুল কমিশনার গ্রæপের সমর্থক রবিউল ইসলাম নিহত হওয়ার খবর জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সাইফুল সমর্থকরা জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিপক্ষ আক্কাচ আলী, কবির উদ্দীন, হাসেম আলীম, মাছেম আলী, সদর উদ্দীন, কদর আলী, উজ্জল, আব্দুল কদ্দুস, সুজন, রাজন ও হায়বার আলীর বাড়ি ভাংচুর করে। এরমধ্যে ছয়টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। লুট করা হয়েছে আক্কাচ আলী, সুজন, রাজন ও আব্দুল কুদ্দুসসহ একাধিক ব্যক্তির গরু-ছাগল। শনিবার সকালেও লুটপাট অব্যাহত ছিল।
সরজমিন দেখা গেছে, আক্কাচ আলী গ্রæপের সমর্থকরা ঘরবাড়ি ছাড়া। বাড়িতে মহিলারা রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে হরিনাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জোড়াপুকুরিয়া গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রামটিতে আতংক থাকলেও এখন পরিবেশ শান্ত। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, শুক্রবার রাতের অগ্নিসংযোগে ৬টি বাড়ির কিছু ঘর পুড়ে গেছে। বিচুলি গাদায়ও আগুন লাগানো হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.