সানজিদা আক্তার সান্তনা : যশোরে ৬ বছর শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা ও দেহ গুমের দায়ে নাজমুল ওরফে বান্দা আলী নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক। আজ রোববার যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল -১ এর বিচারক গোলাম কবীর এই রায়ের আদেশ দেন। যশোর আদালতের স্পেশাল পিপি সেতারা বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুল ওরফে বান্দা আলী যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ঠাকুরকাঠি গ্রামের শের আলীর ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনে জানা যায়, যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার ঠাকুরকাটি গ্রামের কৃষি শ্রমিক মুক্তার আলী বিশ্বাসের সাথে প্রতিবেশী নাজমুল ওরফে বান্দা আলীদের পারিবারিক শত্রুতা ছিল। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকালে মুক্তার আলীর মেয়ে রিক্তা বাড়িতে খেলাধুলা করছিল। একপর্যায়ে সে নাজমুলদের বাড়ির উঠোনে গেলে নাজমুল সজোরে তাকে চড় মারে। এতে রিক্তা জ্ঞান হারায়। পরে তাকে ঘরের ভেতর নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে শিশুটিকে বস্তাবন্দি করে তার খাটের পাশে রাখে। এরপর তাদের বাড়ির পাশে পুকুরের ধারে গর্ত খুঁড়ে রাখে মরদেহ পুঁতে রাখার জন্য। এদিকে, মেয়েকে না পেয়ে স্বজনরা তাকে বাড়ির আশেপাশে খুঁজতে থাকেন।
এমনকি নাজমুলও তাদের সাথে খোঁজে। বাড়ির পাশের পুকুরে সে জালও টানে। লোকজন পুকুরের ধারে গর্তের কারণ জানতে চাইলে নাজমুল বলে সেখানে সে আলু লাগাবে। লোকজনের সন্দেহ হলে তারা নাজমুলের ঘর দেখতে চান। কিন্তু সে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছিল না। একপর্যায়ে তারা ঘরে ঢুকলে নাজমুল সেখানে থেকে পালিয়ে যায়। পরে ঘরের ভেতর খাটের কোনায় তারা বস্তাবন্দি মধ্য দেখতে পায়। বস্তা খুলে তার ভেতরে শিশু রিক্তার পোশাকহীন মরদেহ পাওয়া যায়। তার গোপনাঙ্গ রক্তাক্ত ছিল। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওইদিনই নিহত শিশুর বাবা মুক্তার আলী বিশ্বাস বাঘারপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঘারপাড়া থানার ইন্সপেক্টর মকবুল হোসেন ২০২২ সালের ১৭ মে নাজমুলকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সাক্ষ্য গ্রহণশেষে আদালত আজ আসামি নাজমুল ওরেফে বান্দা আলীকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা রায় দেন। রায়শেষে আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.