বিএনএ ঝিনাইদহঃ সে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। বাড়ির উঠোনে ঘুটঘুটে অন্ধকার। বৃদ্ধা দাদির বুকের উপর মানসিক ভারসম্যহীর নাতি বসে অনবরত হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করছে। হাতুড়ির আঘাতে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল ৮২ বছর বয়সী দাদি রুশিয়া বেগমের শরীর থেকে। আঘাতের পর আঘাতে এক সময় নিথর হয়ে পড়ে দেহটি। হত্যার পর দাদির বুকের উপর উপর বসে ছিল মানসিক ভারসম্যহীন নাতি আব্দুল মান্নান। ঘটনার আগে ওই নাতির ভয়েই বাড়ি ছেড়ে সবাই পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বলরামপুর গ্রামে। রুশিয়া বেগম ওই গ্রামের মনির উদ্দিন মন্ডলের স্ত্রী। হত্যাকান্ডে জড়িত আব্দুল মান্নানকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রামবাসি ও পুলিশ জানায়, আব্দুল মান্নান প্রায় সময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মা-বাবাসহ বাড়ির লোকদের ওপর চড়াও হয়। তার আচরণে ভীত হয়ে বাড়ি ছেড়ে পাশের গ্রামে চলে যায় স্বজনরা। ঘটনার দিন রাতে আব্দুল মান্নান নিজেই সবাইকে বাড়িতে ডেকে আনে। রাত আড়াইটার দিকে সে আবার বিগড়ে যায়। দাদির ঘরের দরজা ভেঙে তাঁকে বাড়িরে উঠানে বসিয়ে উপর্যপুরি হাতুড়িপেটা করতে থাকে। এতে দাদি রুশিয়া বেগম মৃত্যুবরণ করেন। নিহতের ছেলে ফজলুর রহমান বলেন, দিনের বেলায় ছেলের অস্বাভাবিক আচরণে তাঁরা বাড়ি ছেড়ে পাশের গ্রামে চলে যান। পরে রাতে ছেলে তাঁদেরকে আবার বাড়িতে ডেকে আনলেও ছেলের ভয়ে বাড়িতে না ঘুমিয়ে রাস্তায় হেটে বেড়াচ্ছিলেন। মধ্য রাতে মায়ের চিৎকারে বাড়িতে গিয়ে তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাঁদেরকে মারতে তাড়া করে। পরে ভয়ে তাঁরা দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেন। তিনি আরও জানান, মাকে হত্যা করে তাঁর বুকের ওপর বসে ছিল মান্নান। তিনি দাবি করেন, তার ছেলে মাঝে মাঝে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তখন সে সবাইকে মারতে উদ্যত হয়। তবে দুই একদিন পরে আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। এর আগেও একবার সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুÐু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন বলেন, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসামিকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি হত্যা মামলা হবে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.