আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করলেও এখনো এই রোগ নিয়ে ভয় কাজ করে অনেকের মাঝে। এখনো কেউ কেউ নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে মাস্ক ব্যাবহারের পাশাপাশি ঘরের বাহিরেও কম বের হচ্ছেন। তবে এবার সম্পূর্ণ এক অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হলেন ভারতের পুলিশ সদস্যরা। করোনা সংক্রমণে মারা যেতে পারে, এমন ভয় থেকেই নিজের সন্তানসহ দীর্ঘ তিন বছর ঘরবন্দি এক নারীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ । বিষয়টি পুলিশের নজরে আনেন ওই নারীর স্বামী সুজন মাঝি, যিনি একজন প্রকৌশলী। এ সময়ে তাকেও (স্বামী) ঘরের বাইরে থাকতে হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
সম্প্রতি দিল্লির গুরুগ্রামের চক্করপুরের এ ঘটনার খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।এছাড়া একাধিক ভারতীয় গনমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর মুনমুন মাঝি নামের ওই নারী তার ৭ বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে ঘরে অবস্থান করতে শুরু করেন। ঘটনার সূত্রপাতের তিন বছর পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তার স্বামী চক্করপুর পুলিশকে বিষয়টি জানান। সুজনের অনুরোধে পুলিশের একটি দলের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মী ও শিশু কল্যাণ বিভাগের সদস্যরা বাসায় গিয়ে ঘরের প্রধান দরজা ভেঙে স্ত্রী মুনমুন ও তাদের ১০ বছর বয়সী সন্তানকে উদ্ধার করে। এ সময় ঘরের ভেতরে ময়লা-আবর্জনা, চুল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ জানায়, এই সময়ে ওই নারী তার সন্তান ও নিজের চুল ঘরেই কেটেছেন। গ্যাসের চুলার পরিবর্তে রান্নার কাজ করতেন ইন্ডাকশনের মাধ্যমে। তার সন্তান ঘরের দেয়ালে আঁকাআঁকি ও পেন্সিল ব্যবহার করে পড়াশোনা করত। এমনকি দীর্ঘ এই সময়ে সে (সন্তান) সূর্যের আলো পর্যন্ত দেখেনি। প্রতিবেশীরাও আঁচ করতে পারেননি তারা ঘরবন্দি হয়ে আছেন।এ বিষয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, করোনা মহামারি থেকে আতঙ্কিত হয়ে ওই নারী এ কাজটি করেছিলেন, তার মধ্যে ধারণা জন্মেছিল, যদি ঘর থেকে বের হয় তাহলে তার সন্তান করোনায় মারা যেতে পারে।
শুধু তাই নয়, এই সময়ে ওই নারী তার স্বামী সুজনকে পর্যন্ত ঘরে অবস্থান করতে দেননি। ২০২০ সালে একবার ভারতে করোনার লকডাউন শিথিল করা হলে ঘর থেকে অফিসের জন্য বের হয়ে তাকে বাইরেই অবস্থান করতে হয়েছে। স্ত্রী-সন্তানকে তিনি শুধুমাত্র ভিডিও কলে দেখতে পারতেন। ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, সন্তানের স্কুলের বেতন স্বামী সুজনই পরিশোধ করতেন। এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে তিনি ঘরের ফটকে রেখে আসতেন। ওই নারী ও শিশুকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.