নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পত্র পাওয়ার পরও কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ সংশোধনের দাবিতে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা দু’দিনের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন।

বেনাপোল কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, পত্র প্রাপ্তির পর রোববার রাতে আমরা মিটিং করেছি।ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা সোমবার ও মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করব।
এতে দু’দিন বেনাপোল বন্দরের সকল কাজকর্ম বন্ধ থাকবে।

এদিকে রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস রপ্তানি ও বন্ড শাখার প্রথম সচিব আবুল বাশার মোহম্মদ শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি পত্র বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনেকে দেওয়া হয়েছে। পত্রে তাদের প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনার জন্য ৭ফেব্রুয়ারি রাজস্ব ভবনে অংশ নেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। পত্রে কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ সংশোধনের লক্ষ্যে পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এ দেশের সব সিএন্ডএফ এজেন্টের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলে মনে করেন বেনাপোল বন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ওই বিধিমালা সংশোধন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটি জানায়, লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এর বিধি ১৫(৫) ঘ,১৯(খ)(আ),২৩(১)ঞও এবং ২৪(৪) সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের স্বার্থবিরোধী। ফলে এসব বিধি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা ২০০০ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা, এইচএস কোড ও সিপিসি ভুলের কারণে জরিমানা আরোপ ও শাস্তিমূলক বিধিবিধান বাতিল করা প্রভৃতি।

বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধন না করা হলে ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) এনবিআরকে এ চিঠি দেয় সংগঠনটি।

চিঠিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. সুলতান হোসেন খান ও সভাপতি আলহাজ শামসুর রহমানের সই রয়েছে। এতে বলা হয়, বিধিমালা জারীর পর এর প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য এ ফেডারেশন কর্তৃক বার বার চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানানো হয়। এর পরও কোনো ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে উত্থাপিত লাইসেন্সিং রুলের কয়েকটি বিধি ও উপ-বিধি সংশোধনীর প্রস্তাব করা হলেও তা আমলে নেয়নি রাজস্ব বোর্ড। এ কারণে গত বছর কয়েকবার কর্মবিরতি করেন তারা।

এতে আরও বলা হয়, গত বছরের জুলাই মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত দাবির সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তারা বিধিমালা সংশোধনের বিষয়ে সংগঠনের নেতাদের আশ্বস্ত করেন।

দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লাইসেন্সিং রুল সংশোধনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এ বিষয়ে ফেডারেশনের নেতারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেও কার্যকর কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। আর তাতে সারা বাংলাদেশে কর্মরত সিএন্ডএফ এজেন্টদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।