আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানে ট্রেন চালানোর জন্য আর মাত্র তিন দিনের তেল মজুত রয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে দেশটির রেল যোগাযোগ। এর ফলে বিপদে পড়বে পাকিস্তানবাসী। সোমবার (২ জানুয়ারি) পাকিস্তানের রেলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম ডন।

দেশটির রেলমন্ত্রী খাজা সাদ রফিক পাকিস্তান রেলের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এই বিষয় দ্রুত সমাধান করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপনি যদি এখনই রেলের এই পরিস্থিতির দিকে নজর না দেন, তাহলে অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাবে।’ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই অনেক পণ্যবাহী ট্রেন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান রেল। রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করাচি ও লাহোরে বেশ কয়েকটি এমন মালবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। সম্পূর্ণভাবেই এটি জ্বালানির অভাবের কারণে। অবস্থা যে কতটা খারাপ, এই ঘটনা থেকেই সুস্পষ্ট।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এর রেলের কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমন অবস্থা। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা না হলে রেল দেউলিয়া হয়ে যাবে।

ডন এর এই প্রতিবেদনে রেলের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের গ্র্যাচুইটি প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও নেই রেলের কাছে। অবসরপ্রাপ্তদের কথা তো দূরের ব্যাপার, সাধারণ কর্মীদেরই মাসিক বেতনের টাকা নেই রেলের অধিদফতরে। আগে যাঁরা নিয়মিত মাসের ১ তারিখেই বেতন পেতেন, তাঁরাই এখন ১৫-২০ তারিখে টাকা পাচ্ছেন।

এদিকে সময় মতো বেতন না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ চালকরা। গত ডিসেম্বরে ২০ তারিখ পর্যন্ত বেতনই পাননি বহু রেল চালক। এমন অবস্থায় তাঁরা দেশজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁদের বেতন মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। সেটিও করা হয় দুইটি কিস্তিতে। এরপর অবশ্য আন্দোলন স্থগিত করেন রেল চালকরা।

পাকিস্তান রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত রেলের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল। সেই সময়ে মালবাহী রেল রেকর্ড আয়ও করছিল। কিন্তু তারপর থেকে ক্রমেই রেলের অবনতি হয়েছে। সমগ্র পাকিস্তানজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে অর্থনৈতিক পতন হয়েছে। আর তার ভাগীদার হয়েছে পাকিস্তান রেলও। আর পুরো বিষয়টার ভুক্তভোগী সেখানকার আমজনতা।