ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভাই ও বোনদের অংশ ফাঁকি দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে তিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানেননি। আদালতের আদেশ অমান্য করে তিনি জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে তার বিরুদ্ধে ভায়োলেশনের আরেকটি মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শৈলকুপা উপজেলার গাবলা মৌজার ছোট গাবলা গ্রামে।
জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম করতিপাড়া প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শৈলকুপার ছোট গাবলা গ্রামের আনছার আলীর ছেলে।
শৈলকুপা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দায়ের করা দেওয়ানি মামলা সুত্রে জানা গেছে, শৈলকুপার ছোট গাবলা গ্রামের আনছার মাষ্টার ইন্তেকাল করলে তার তিন ছেলে আশরাফুল ইসলাম মুকুল, আব্দুল মাজেদ, রফিকুল ইসলাম, মেয়ে মনেয়ারা, শেফালী, সোনালী ও রুপালী খাতুন ওয়ারেশ প্রাপ্ত হন। অন্যদিকে আনছার আলীর মা সোলেমান নেছার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি একমাত্র ছেলে আনছার আলী ওয়ারেশ সুত্রে মালিক হন।
এ সব জমি ভাগ বন্টনের প্রস্তাব দিলে বিবাদী রফিকুল ইসলাম মাষ্টার অস্বীকার করে হাল রেকর্ড প্রদর্শন করে জানান, এ সব জমির বেশির ভাগ তার নামে রেকর্ড হয়েছে। অন্যান্য ভাইয়েরা অশিক্ষিত হওয়ায় সুচতুর রফিকুল মাষ্টার পিতা ও দাদির নামে থাকা জমি সমান বন্টন না করে তঞ্চকতার আশ্রয় নিয়ে নিজের নামে রেকর্ড করেন। ফলে রফিকুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম মুকুল আদালতে বন্টনের মামলা করেন, যার নং দেওয়ানি ৩৫৩/২১। বিজ্ঞ আদালত বন্টনের মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী জমি বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু রফিকুল ইসলাম আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেন গত ১৬ জানুয়ারি ২০২২ ইং তারিখে ৯৮ শতক জমি বিক্রি করে দেন। অথচ এই জমির অংশ রফিকুলের দুই ভাই আশরাফুল ইসলাম মুকুল ও আব্দুল মাজেদসহ অন্যান্য শরিকরাও পাবেন। হাল রেকর্ড রফিকুলের নামে হওয়ায় তিনি এই জমি বিক্রি করতে সক্ষম হন বলে অভিযোগ। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মাঠ জরিপের সময় ১৫৭ নং ডিপি খতিয়ানে যে দলিলের রেফান্সে দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে কোন মিল নেই। ১৯৭২ সালের ২৭ নভেম্বর ৬৪১১ নং দলিল ও ১৯৯২ সালের ২২ ডিসেম্বর ৬৬৫২ নং দলিলের মালিক বুনিয়াদে রফিকুল নিজ নামে ৯৮ শতক জমি রেকর্ড করে নেন। দলিল দুইটি তুলে মামলার বাদী আশরাফুল ইসলাম মুকুল দেখেন ৬৪১১ নং দলিলের মালিক শৈলকুপার ১৭২ নং ব্যাসপুর মৌজার রুপদাহ গ্রামের আব্দুল বারীসহ ৬ জন। তারা এই জমি শৈলকুপার মিনগ্রামের আবু সালেহ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের কাজ থেকে ক্রয় করেন। ১৭২ নং ব্যাসপুর মৌজার জমি জালিয়াতির মাধ্যমে রফিকুল ১৩৯ গাবলা মৌজার জমি বলে রেকর্ড গ্রহন করেন। অন্যদিকে ৬৬৫২ দলিলের রেফান্সে ৫৪১ দাগে জমি তিনি ১০ শতক জমি রেকর্ড না করে হাল ২২, ২৩ ও ১৬৩ দাগের জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নেন। এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শরীকদের জমি বিক্রি করার দায়ে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে ভায়োলেশনের মামলা হয়েছে, যার নং মিস ৫/২২।
এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবি এ্যাড শরিফুল ইসলাম জানান, বাদী আদালতে বন্টনের মামলা করেছেন। মামলা চলাকালে বিবাদী আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। এটা আইন আমান্য করা হয়েছে। বাদী আদালতে ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা করি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য ও পিতার জমি বন্টনে অংশ ফাঁকির বিষয়ে বিবাদী রফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভাইয়েরা তো তাদের সব অংশ বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। তবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, তিনি আদালতেই বিষয়টি নিস্পত্তি করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.