জাতীয় সংবাদ, রাজনীতি | তারিখঃ ডিসেম্বর ৮, ২০২২ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 4653 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ রাজধানীর নয়াপল্টনে হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে এর বাইরে বিকল্প ভেন্যু যেটি বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হবে সেখানেও এই সমাবেশ করতে পারে দলটি।
নয়াপল্টন কার্যালয় থেকে পুলিশ প্রত্যাহার করে সমাবেশ করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহ্বানও রেখেছেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘বিএনপির পূর্বঘোষিত এই বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য সরকারই দায়ী থাকবে।’
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাধা দেওয়ার পরেও আমাদের অন্য ৯টি সমাবেশ হয়েছে। সেসব সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপি সংবিধানসম্মত শান্তিপূর্ণভাবে গণসমাবেশ করবে। এখানেও ঢল নামবে। আপনারা নিজেরা দেখবেন।’
নয়াপল্টন ছাড়া বিকল্প গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব পেলে বিএনপি সেটি বিবেচনা করবে জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নয়াপল্টনের সমাবেশ করার কথা বলেছি। তবে প্রশাসন যদি আমাদের অন্য কোনো প্রস্তাব দেয়, সেটি যদি আমাদের অনুকূলে হয় তাহলে আমরা ভেবে দেখব।’
‘তবে আমরা নয়াপল্টনেই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চাই। এই সমাবেশের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সরকারের। অন্যথায় এর দায়িত্বও সরকারকে নিতে হবে।’
বুধবার বিকাল ৩টার দিকে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক মারার শামিল:
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নয়াপল্টনে যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে সেটি গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক মারার শামিল। আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে গণআন্দোলনে ভীত হয়ে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
‘নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয় থেকে অবিলম্বে পুলিশ প্রত্যাহার করতে হবে। সেখানে সমাবেশ করার পরিবেশও তৈরি করা সরকারের দায়িত্ব।’
নয়াপল্টনে ‘অত্যাচার’ সারাবিশ্ব দেখেছে:
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারাবিশ্ব দেখেছে আমাদের ওপর কিভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। পুলিশ নিজে বোম নিয়ে দায় চাপিয়েছে বিএনপির ওপর। পুলিশ বিএনপি অফিসে ঢোকার সময় কোনো সাংবাদিক বা দলীয় নেতাদের সঙ্গেও নেয়নি। তারা যে ব্যাগসহ কার্যালয়ে প্রবেশ করেছে তা বিভিন্ন টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে।’
পুলিশই পুরো সড়ক অবরুদ্ধ করে রেখেছে:
বিএনপি অধিকারহারা মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আজ আমরা অধিকারহারা। অথচ সমাবেশ করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
‘পুলিশ বলছে, নয়াপল্টনে সমাবেশ করলে মানুষের চলাচলে অসুবিধা হবে। অথচ পুলিশ নিজেই পুরো সড়ক অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এখন অসুবিধা হয় না?’
পার্টি অফিস থেকে গ্রেপ্তার নজিরবিহীন:
বুধবারের ঘটনায় দলের কার্যালয় থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশ নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে নেতাদের গ্রেপ্তার নজিরবিহীণ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণ সমাবেশ ঠেকাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচারের স্ট্রিমরোলার চালাচ্ছে। পার্টি অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সিনিয়র নেতাদের। এটি নজিরবিহীন ঘটনা।’
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেডএম জাহিদ হোসেন, সৈয়দ ইমরান সালে প্রিন্স, জহির উদ্দিন স্বপন, সিরাজুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন খান, তাইফুল ইসলাম টিপু, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়ায় উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।