নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর সম্মেলনে এসে নেতাকর্মীদের ওপর প্রতি ক্ষোভ ঝাড়লেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে তিনি বলেন, এমন ছাত্রলীগ আমরা চাই না। মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না।
শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
বর্তমান ছাত্রলীগ নানা বির্তকের জন্মদিন দিলেও সবকিছু ভুলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা সম্মেলনে উপস্থিত হন। কিন্তু এসেই দেখেন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। কেউ কথা শুনছে না। পছন্দের পদপ্রার্থীর নামে স্লোগান দিচ্ছেন। নেতাদের পোস্টারে ঢাকা পড়ছে সব। এমন কি তাদের কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা বক্তব্য দিতে পারেননি। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, সব পোস্টার নামাও, স্লোগান বন্ধ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো শৃঙ্খলা নেই! পোস্টার নামাতে বলছি, নামায় না! এটা কী ছাত্রলীগ, তারা কোন ছাত্রলীগ করে, নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। আজ সম্মেলনে দেখি সবই নেতা, তাহলে কর্মী কোথায়! যে ছাত্রলীগ নিয়ম শৃঙ্খলা মানে না এই ছাত্রলীগ আমার চাই না।
তিনি বলেন, আমরা চাই নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলবে এবং শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ। যারা নিময় কানুন মানবে তাদের চাই না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকেই মুজিব কোট পড়েন। কিন্তু মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে, শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী হতে হবে। যারা বঙ্গবন্ধু আর্দেশের কর্মী দলের খাঁটি কর্মী তারা কখনো নিয়ম নীতি ভঙ্গ করে না।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজকে নানকের মতো, আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত, প্রেসিডিয়াম, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগের প্রাক্তণ সাধারণ সম্পাদক সময়ের অভাবে বক্তৃতা করতে পারেনি। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, সুশৃঙ্খল করুন, সুসংগঠিত করুন, যারা
কথা শুনবে না, নিয়মনীতি মানবে না এমন ছাত্রলীগ কর্মী আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে এই ছাত্রলীগ দরকার নেই। দুর্নামের ধারা থেকে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে এটাই আজকে অঙ্গীকার। সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে ছাত্রলীগ নেতাদের কাজ করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পরশু রাতে মতিঝিলে বিআরটিসির একটি দোতলা বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। শুরু হয়ে গেছে৷ তারা আগাম জানান দিচ্ছে৷ ১০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে তারা জানান দিচ্ছে আগুন সন্ত্রাস। ১০ ডিসেম্বরে ঘিরে বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। ১০ ডিসেম্বর ঘিরে বিএনপি যেন কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে না পারে সেজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারা দেবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) সন্ত্রাস করবে আর আমাদের কর্মীরা ললিপপ খাবে? তাদের কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না।
বিএনপির প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, কোথায় টাকা! টাকা আসে, দুবাই থেকে। বস্তায় বস্তায় টাকা আসে। টাকা ওড়ে। ক্ষমতায় না থাকলেও টাকার অভাব নাই।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আগুন নিয়ে খেলা শুরু হয়ে গেছে। খেলা হবে। আন্দোলবে হবে, নির্বাচনে হবে, ডিসেম্বরে হবে, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। 'আক্রমণ করলে পালটা আক্রমণ হবে কনা সময় বলে দেবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবু এমপি।
বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
সম্মেলন যৌথভাবে সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, দক্ষিণ শাখার সভাপতি মো. মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদ।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুল মুননাফ, মোবাইল : ০১৭১১ ৩৫৯৬৩১, ইমেইল: gsongbad440@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 gramer songbad. All rights reserved.