নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জনগণের মৌলিক অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার বিকালে তেজগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এবারের বাজেটে মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে ঢালাওভাবে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। এ নিয়ে যখন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা তুঙ্গে, তখন এই প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কালো টাকা যাতে কেউ না রাখে সেজন্য অল্প ট্যাক্স দিয়ে বৈধ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।’

সব সরকারের সময় কালো টাকা সাদা করার সুবিধা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা ফেরাতেই বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। যাতে সবাই সেটা বের করে।’

বিএনপি আমলের সবশেষ বাজেট ৬২ হাজার কোটি টাকা ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগ বাজেট দিয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার। বাজেটে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সীমিতভাবে আগাতে চাই। যাতে মানুষের কষ্ট না হয়। সেভাবেই বাজেট দেওয়া হয়েছে।’

বিশ্বের নানা সঙ্কটের ধাক্কা এখনো দেশের অর্থনীতিতে রয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘করোনার সময় রিজার্ভ কত আছে তার দিকে না তাকিয়ে মানুষের নিত্য প্রয়োজন মেটানো ও জীবন বাঁচানোই ছিল সরকারের একমাত্র লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে চলতে হবে। যাদের কোনো কিছু ভালো না লাগে তাদের ভালো না লাগাই থাক। তাতে কান দেওয়ার দরকার নাই। তাদের অস্বাভাবিক সরকার থাকলে ভালো লাগে। কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সরকারের কিছু ভালো লাগে না। তাদের নাকি মূল্যায়ন করা হয় না।’

‘মানু্ষরে আস্থা বিশ্বাস আমাদের শক্তি। সেটি নিয়েই আমরা চলতে চাই। মানুষের কল্যাণ করাই লক্ষ্য’— যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তেজগাঁওয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী
তেজগাঁওয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী

ছয় দফার তাৎপর্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছয় দফাই ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর। পাকিস্তান আমলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েও বঞ্চিত হয়েছিল পূর্ব বাংলা। পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঞ্চনা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেজন্যই তিনি ছয় দফা দিয়েছিলেন। এরপর তাকে বারবার গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাসহ বাঙালির সব অর্জন বুকের রক্ত দিয়েই অর্জিত হয়েছে।’

বাংলার নামিদামি নেতারা শুধু ক্ষমতায় যেতে চাইতেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ছিল ২০ দলীয় জোট। এখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ২০ দলীয় জোট।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের কিছু ‘‘আঁতেল’’ আছে যারা ৭০ এর নির্বাচনে বলেছিলেন, ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ভোটের বাক্সে লাথি মেরে নয়, ভোট দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন করা হবে।’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছে তাদের মাথায় ছিল শুধু ক্ষমতা দখল। আর চিন্তায় ছিল পাকিস্তান। যা তাদের কর্মকাণ্ডে দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা ২৯ বছরে দেশের কোনো উন্নয়নই করতে পারেননি। উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করেছি বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’