রাজনীতি | তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 9713 বার
নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিততে হামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর সরকার দলের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। পরে পুলিশ উল্টো বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এ নিন্দা জানান।
সরকার গণআন্দোলনে ভীত হয়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা, গুলি ও গ্রেপ্তার করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের যে কোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। এর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে; দেশের মানুষকে ভীত রেখে আবারও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা।
শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগ দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজ বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে বিএনপি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার ও হামলার মধ্য দিয়ে বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার নিষ্ঠুরতার আরও একটি নজির স্থাপন করলো। তবে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাদের ওপর হামলা-নির্যাতন চালিয়ে চলমান গণআন্দোলনকে দমন করা যাবে না। মানুষ এখন জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না ঘটিয়ে জনগণ ঘরে ফিরে যাবে না।
সারাদেশে পদযাত্রা কর্মসূচিতে গ্রেপ্তার ও আহত:
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপডি এম এ সালাম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম ও সদস্য শাহেদ আলীসহ ৪৭ জন, কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতা এ কে বিশ্বাস বাবু, শহীদ সরকার মঙ্গল, আমিরুল ইসলাম মন্টুসহ ২০ জন, নেত্রকোণায় বিএনপি নেতা কাদির, আলমগীর, এখলাস মেম্বার, বকুল মিয়া, রুবেল মিয়াসহ ১০ জন, ঝালকাঠিতে জেলা যুবদল সদস্য সচিব এ্যাড. আনিসুর রহমান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তৌহিদ হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. শামীম মৃধাসহ ১৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গুরুতর আহত করা হয়েছে ফেনী সদর উপজেলা ৭ নং বালিগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর নবী, কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতা বশিরুল আলম চাঁদ, ওয়াকার পারভেজ, কৌশিক আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম অনিক, নাঈম শেখ ও সাগির কুরাইশসহ ৩০ জন, ঝালকাঠিতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন, নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান হেলাল, ঝালকাটি পৌর বিএনপির সভাপতি মো. নাসিমুল হাসানসহ ৫৭ জন, নেত্রকোণায় বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন, কামরুল হক, আশরাফুল ইসলাম, নুরুল ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে, যার মধ্যে ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
কুমিল্লায় পুলিশের বেপরোয়া গুলিবর্ষণে গুরুতর আহত হয়েছেন ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মী, গ্রেপ্তার করা হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন নেতাকর্মীকে। কুমিল্লা, নেত্রকোণাসহ বিভিন্ন জেলায় গুলি, ককটেল হামলাসহ চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের হামলায় শতাধিক নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানিয়ে হামলায় আহত নেতাকর্মীদের সুস্থতা কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আজ শনিবার দেশব্যাপী সকল জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি।