শিবগঞ্জে হোটেলের বর্জ্যে জন্ম নিচ্ছে মশা ও দূষিত হচ্ছে পরিবেশ
নুরতাজ আলম: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রতিটি হোটেল ও মিষ্টান্ন দোকানের ব্যবহৃত পানি ও বর্জ্য নির্গত হয়ে পাশের গর্তে জমে জন্মাচ্ছে মশা ও বর্জ্যরে কারণে দূষিত হচ্ছে বায়ু এবং পরিবেশ। ফলে ছড়াচ্ছে মশা আক্রমণ ও বায়ু দূষিত বিভিন্ন রোগ। শনিবার সকালে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজারে অবস্থিত বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড মিষ্টান্ন ভা-ার, আলিয়া বেকারী এবং এর আশপাশের কয়েকটি মিষ্টান্ন ভা-ারে ব্যবহৃত বর্জ্য পানি একটি গর্তে গিয়ে জমা হচ্ছে। ফলে জমাকৃত বর্জ্য পানিতে পঁচে দূর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এছাড়া আলিয়া বেকারীর টয়লেটের মল সরাসরি ওই গর্তে নির্গত হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মশা প্রজনন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মশা প্রকোপ ধারণের কারণে সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। একইভাবে উপজেলার মনাকষা, বিনোদপুর, দাদনচক, দূর্লভপুর, ৮ রশিয়া, শাহবাজপুর, শিবগঞ্জ রাণীহাটিসহ ৫০টি ছোট-বড় বাজারে একই অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিটি হোটেল ও মিষ্টির দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি হচ্ছে। হোটেলে পিছনের গর্তে জমে থাকা দূষিত বর্জ্যে বসে থাকা মাছি ও মশা খাবারের উপরে বসে বিভিন্ন জীবাণু ছড়াচ্ছে। আর এলাকার মানুষ ওই খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়চ্ছে। স্থানীয়রা আরো বলেন, গর্তে জমে থাকা পানিতে মশা জন্মাচ্ছে। ওই মশা হোটেলে খেতে বা মিষ্টান্ন খাবার নিতে আসা মানুষদের কামড়াচ্ছে। হতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ছেন।
এদিকে, বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক মোঃ মালিক হাবিবুর রহমান জানান, আমার দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোন খাবার তৈরি হয় না। এছাড়া দোকানের পিছনে যে গর্ত রয়েছে সেখানে হোটেলের ব্যবহিত পানি ছাড়া অন্য কোন বর্জ্য ফেলা হয় না। তিনি আরো বলেন, আমার দোকান পরিদর্শন করতে এসে স্যানেটারি ইন্সপেক্টর স্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও ময়লা আবর্জনা ফেলার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। তাঁকে বলেছি ১ বছরের মধ্যে এই গর্ত ভরাট করে হোটেলের ব্যবহিত পানি ফেলা বন্ধ
হবে।
অন্যদিকে, আলিয়া বেকারীর মালিক মোঃ আলম জানান, আমি নিজের জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলাছি। এতে পরিবেশ দূষণের কিছু দেখছি না তো। টয়লেটের মলের বিষয়ে তিনি বলেন, ট্যাংকি অভারলোড হওয়ায় এখন ঘটনা ঘটেছে।
এব্যাপারে কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বেনাউল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্ন কর্মসূচি অভিযান চালিয়েছি। আব্বাস বাজারে যে জায়গাটুকু অপরিচ্ছন্ন রয়েছে তা পরিচ্ছন্নের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের খাবার তৈরির বিষয়ে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর নিতাই চন্দ্র ঘোষ জানান, দোকার মালিকদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বর্জ্য নির্গত হয়ে পরিবেশ দূষণের বিষয়টি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হব।
অপরদিকে, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম জানান, সারাদেশে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণকে নিজ নিজ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ময়লা আবর্জনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে বলা হয়েছে। তাঁরা নিজ উদ্যোগে সেই কর্মসূচি পালন করছে। হয়কো বা কোন কোন জায়গা জানার বাইরে থাকায় তা পরিস্কার করা হয়নি। তবে, যে সব এলাকায় ময়লা আবর্জনা ও নর্দমা রয়েছে তা পরিস্কার করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যদি হোটেল বা বেকারীর টয়লেটের মল সরাসরি নির্গত হয়ে পরিবেশ দূষণ করে জনস্বাস্থ পরিবেশ দূষণ করে তাহলে পরিবেশ দূষণের দায়ে তাদের আইনে আওতায় আনা হবে।