শার্শার পুটখালী সীমান্ত ঘাট দিয়ে বানের স্রোতের ন্যায় আসছে ফেনসিডিল ভারতে যাচ্ছে সোনা
বিশেষ প্রতিবেদক : যশোরের সিমান্ত উপজেলা শার্শার পুটখালি, রুদ্রপুর, দৌলতপুর ও ঘিবা চোরাচালান ঘাট এখন চোরাচালানীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠেছে। কথিত ঘাট মালিকের নিয়ন্ত্রনে স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করেই অবাধে বাংলাদেশ হতে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০কেজি স্বর্নের চালান ভারতে পাচার করা হচ্ছে বিনিময়ে ভারত হতে চোরাই পথে ঢুকছে হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। সমাজ ধ্বংসকারী এ মাদকের চালান বিশেষ সুবিধায় পৌছে দেওয়া হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ কাজে জড়িত আছে নারী, পুরুষ ও উঠতি বয়সী যুবকেরাও।
জানা গেছে, বুধবার ভোর রাতে দৌলৎপুর সীমান্তের বালুর মাঠ পোস্ট এলাকার নিকটস্থ আম বাগানের মধ্যে হতে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ২৬৬বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেন ২১বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর সদস্যরা।
দৌলৎপুর ক্যাম্প কমান্ডার মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ফেনসিডিল উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জব্দকৃত ফেনসিডিল সিজার করে জমা দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত পথে ধারাবাহিক ভাবে আসা অন্য একটি চালান একইদিন সকালে (২২জানুয়ারী) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দূর্গাপুর গ্রামের মেহগনি বাগান হতে ২৭৭ বোতল ফেনসিডিলসহ মোঃ শফিকুল (২৬)নামের এক যুবককে আটক করেন। গত ২১ জানুয়ারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাভারন সার্কেল ও শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সার্বিক তত্তাবাধনে নারী মাদক ব্যাবসায়ী রাশিদা খাতুন(২০) কে ৪৮ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করেছেন যা মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারী রবিবার গভীর রাত ২টার সময় যশোর-কলকাতা সড়কের নতুন হাট নামক স্থানে বিজিবি ৪৯ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে প্রায় ১১ কেজি ৯৪পিস স্বর্নের বার(ওজন ১০কেজি ৯৩৫ গ্রাম) যার বাজার মূল্য ৬ কোটি ৬০লাখ টাকা সহ ৩ জনকে আটক করেন।
বিজিবির দেওয়া প্রেস ব্রিফিং সুত্রে জানা যায়, আটক হওয়া সাদা রং এর ঢাকা মেট্রো-গ-৪৩৪২২৯ প্রাইভেট কারে বহন কৃত স্বর্নগুলো ভারতে পাচারের জন্য নেওয়া হচ্ছিল। চোরাকারবারীদের জন্য নিরাপদ ঘাট হিসাবে পুটখালী ঘাট শীর্শে রয়েছে। জনৈক নাসির নামের ব্যাক্তি ঘাটটি নিয়ন্ত্রন করেন বলে স্থানীয়রা জানান। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রনে সরকারের নেওয়া শূন্য টলারেন্স নীতি বা সম্প্রতি যশোর এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন পিপি এম ঘোষিত শহরকে মাদক মুক্ত করার অঙ্গীকার ফলপ্রসু না হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ছে। বিজিবির হাতে ধৃতরা বেশীর ভাগই মজুরী খাটা জন তাই মাদক ব্যাবসায়ীদের রাঘব বোয়ালরা বরাবরই ধরাছোয়ার বাইরে।
শার্শা সীমান্তের চোরচালানী কাজে জড়িত এক ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাজধানী হতে আসা স্বর্ন যশোর এসে হুন্ডি হয়ে নাভারন সাতহ্মীরা মোড় দিয়ে ৭ মাইল এলাকার ভিতর দিয়ে বসতপুর ভায়া বারোপোতা বাজার হয়ে পুটখালী ঘাট নিয়ন্ত্রনকারীদের হাতে পৌছায় ওই একই পথেই ভারত হতে আসা নিষিদ্ধ ফেনসিডিল ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য যশোর থেকেই চাহিদা মোতাবেক দেশের সর্বত্র সরবারহ হয়ে থাকে। চোরাকারবারীদের ব্যাবসার পথের কাটা একমাত্র বিজিবি। প্রচুর অর্থে মেলে থানা পুলিশের সহায়তা, যার কারনে সীমান্তে মাদক বিরোধী অভিযান ফলপ্রসু হয়না বলে আরো জানান ঐ ব্যাবসায়ী। সুত্রটি আরো জানায়, পুলিশ জানে কারা মাদক ব্যবসায়ী কিন্ত পুলিশ তাদের সাথে অলিখিত চুক্তিতে মাদক ব্যবসায়ীদেরকে কিছু না বলে মাদকসেবীদেরকে ধরে। পুলিশ সন্তোষ্ট হলে কাউকে কাউকে ছেড়ে দেয় নতুবা আদালতে চালান দেয়।
সীমান্ত ঘাট দিয়ে মাদক ঢোকা বন্ধ করনে পুলিশী তৎপরতা বিষয়ে যশোর নাভারন ”ক” সার্কেল এর দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জুয়েল ইমরান জানান, যশোরের সুযোগ্য পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় মাদক দ্রব্য নির্মূল করতে জেলা ব্যাপী পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ কাজে সংশ্লিষ্ট সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।