ছোট ভাইয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বৃহত্তর নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের কিছু কিছু চামচা নেতা আছেন, যাঁরা বলেন অমুক নেতা তমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপির দুর্গ ভেঙেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চারটা আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা খুঁজে পাবে না পালানোর জন্য। এটাই হলো সত্য কথা। সত্য কথা বলতে হবে। আমি সাহস করে সত্য কথা বলছি।’
সম্প্রতি এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা।
তার এ বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় দলীয় কিছু নেতাকে ইঙ্গিত করে আবদুল কাদের মির্জাকে বলতে শোনা যায়, নোয়াখালীর মানুষজন বলে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এটা সত্য। কিন্তু আপনাদের জনপ্রিয়তা বাড়েনি। আপনারা প্রতিদিন ভোট কমান। টাকা দিয়ে বড় জনসভা করা, মিছিল করা কোনো ব্যাপার নয়। টাকা দিলে, গাড়ি দিলে আমিও অনেক লোক জড়ো করতে পারব। না হয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেব।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতিও। বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ তার এই বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এরপর বুধবার (৬ জানুয়ারি) ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ দলে অপরিহার্য নয়। কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে যেকোনো সিদ্ধান্ত দলীয় সভাপতি নিতে পারবেন।
ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, শেখ হাসিনার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
এর আগে বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে কাদের মির্জা বলেছেন, তার কথা নিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে’। আর তিনি যা বলেছিলেন, তা শুধু স্থানীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট নিয়ে, তা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নয়।
এদিকে কাদের মির্জার এই বক্তব্য জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং তাদের জোটের নেতারা।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির বলেন, আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল, নির্বাচন কমিশনকে কোলের মধ্যে বসিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের নামে দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে দীর্ঘ ১২ বছর।